# মিলাদ হোসেন অপু :-
নিখোঁজের ৯ ঘণ্টা পর ভৈরবে বাড়ির কেয়ারটেকারের ওয়ারড্রবের ভিতর পাওয়া নিহত সেই শিশুর দাদী থানায় মামলা দায়ের করেছে। ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার আটককৃত কেয়ারটেকার হাসান মিয়াকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি করেন শিশুর দাদী মোছা. রোজিনা বেগম।
এদিকে শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে থানা পুলিশ। রাতেই কাফন দাফন করেছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়। শিশুটির মৃত্যের ঘটনায় পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মা-দাদী-নানীর কান্না যেন থামছেই না।
নিহত শিশু ৩ বছরের সাহাল আহম্মেদ উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আদর্শ পাড়া গ্রামের কাতার প্রবাসী সানাউল্লাহ আহমেদ ও মোমেনা বেগম দম্পতির ছেলে। তারা পৌর শহরের পঞ্চবটি দ্বীন মোহাম্মদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া।
অভিযুক্ত মামলার আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানা এলাকার মৃত এরশাদ আলির ছেলে হাসান মিয়া।
জানা যায়, ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত দেড়টায় পৌর শহরের পঞ্চবটি এলাকায় দ্বীন মোহাম্মদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়ার ঘর থেকে শিশু সাহালের মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। ওই দিন ভোরে এ ঘটনায় বাড়ির কেয়ার টেকার হাসান মিয়াকে আটক করে।
আসামি হাসান ও নিহতের পরিবার পৌর শহরের পঞ্চবটি দ্বীন মোহাম্মদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া। ৩০ ডিসেম্বর বিকাল ৫টায় পৌর শহরের পঞ্চবটি ভাড়া বাসা থেকে নিখোঁজ হয় সাহাল আহম্মেদ। পরে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুজি করে ও পৌর শহরে মাইক দিয়ে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করে। ওই দিন রাত ১১ টায় থানা পুলিশের কাছে লিখিত হারানো অভিযোগ করেন পরিবারটি। থানা পুলিশ তৎক্ষণাৎ পঞ্চবটি এলাকায় ঘটনাস্থলে গিয়ে সার্বিক বিষয়টি তদারকি করে রাত দেড়টায় কেয়ারটেকার হাসানের ঘরের ওয়ারড্রব এর ভিতরে নিচের ড্রয়ার থেকে প্রথমে শিশুটির জুতা ও পরে উপরের তালাবদ্ধ ড্রয়ার থেকে শিশুরটির মরদেহ উদ্ধার করে।
এদিকে হাসান ও নিহতের মা মোমেনার পরকীয়ার গুঞ্জনে স্থানীয়া জানান, মোমেনার সাথে হাসানের সম্পর্ক কারো চোখে পড়েনি। তবে হাসানের সাথে মোমেনার পরিবারের দ্বন্দ্ব রয়েছে। বিভিন্ন সময় হাসান ও মোমেনার পরিবারের বাকবিতণ্ডা হতো। প্রায় সময় হাসান মোমেনাকে দেখে নেয়ার হুমকি ধামকি দিতো।
এ বিষয়ে নিহতের দাদী রোজিনা বেগম বলেন, আমার একমাত্র নাতীকে হাসান শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে। আমি হাসানের ফাঁসি চাই।
এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহীন মিয়া বলেন, ৩০ ডিসেম্বর রাত ১১টায় অভিযোগ পেয়ে সাথে সাথে আমি ঘটনাস্থলে যায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় হাসানের ঘরের তালা লাগানো ওয়ারড্রব এর ড্রয়ার থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করি। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে ওই এলাকা থেকে হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৩১ ডিসেম্বর হাসানকে আসামি করে নিহতের দাদী রোজিনা বেগম মামলা করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাসান হত্যার কথা স্বীকার করেছে। হাসান বলছে শিশুটির মায়ের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোন প্রমাণাদী পাওয়া যায়নি। তবে কি কারণে হত্যা করা হয়েছিল এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।