# মিলাদ হোসেন অপু :-
ভৈরবে নিজের মেয়ের জামাই’র গোডাউনে আগুন দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে পৌর শহরের চণ্ডিবের এলাকায়। মেয়ের জামাতা নাদিম মিয়া পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকার নূর মোহাম্মদ মিয়ার ছেলে। আর অভিযুক্ত শ্বশুর হলেন পৌর শহরের গাছতলাঘাট এলাকার ফারুক মিয়া। ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাতে ভূক্তভোগী নূর মোহাম্মদ মিয়া আনুমানিক ৮ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি উল্লেখ করে পুত্রবধূ সহ ৩ জনকে আসামি করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকে পুত্রবধূ ছাবিয়ার মা (শাশুড়ি) বকুলা বেগম মেয়ের সংসারে কু-পরামর্শ দিয়ে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি করে আসছিল। বুধবার সন্ধ্যায় ছাবিয়া ও তার স্বামী নাদিম মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। খবর পেয়ে ছাবিয়ার বাবা ফারুক মিয়া জামাতার বাড়িতে এসে মেয়েকে নিয়ে যায় এবং জামাতার পরিবারকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেবে বলে হুমকি দেন। সন্ধ্যায় হুমকি দিয়েই গভীর রাতে জামাতা নাদিমের বাড়ির গেইট আটকিয়ে দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। চারদিকে আগুনের লেলিহান শিখায় ঘুম ভাঙ্গে ভুক্তভোগী পরিবারের। আগুন ছড়িয়ে পড়ে বসতঘরসহ পাশে থাকা বস্তা মালের গোডাউনে। ডাক চিৎকার শুনে এবং আগুন দেখে বাড়ি সংলগ্ন মসজিদের মাইকে ডাকাডাকি করলে এলাকাবাসীসহ প্রতিবেশীরা এসে ঘরের বেড়া কেটে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে। এতে আহত হন পরিবারের কয়েকজন সদস্য। খবর পেয়ে ভৈরব ফায়ার সার্ভিস এসে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন। এ সময় ঘরের পাশে গোডাউনে রাখা তৈরি করা প্রায় ৮ লক্ষ টাকার বস্তা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সব কিছু হারিয়ে অসহায় পরিবারটি এখন মানবেতর দিনযাপন করছে। অপরদিকে ব্যবসা ধ্বংস হওয়ায় সমিতির কিস্তির টাকা পরিশোধ নিয়ে পরিবারটি পড়েছে এখন মহাবিপাকে।
এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের কঠিন বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী নূর মোহাম্মদ মিয়া জানান, সাড়ে তিন বছর আগে ছেলে নাদিমকে গাছতলা ঘাট এলাকার ফারুক মিয়ার মেয়ে ছাবিয়াকে বিয়ে করায়। বিয়ের পর থেকেই তাদের সংসারে কলহ লেগে থাকতো। আড়াই বছরের সোহাগ নামে একটি শিশু সন্তান রয়েছে তাদের সংসারে। নাদিমের শ্বশুর আমাদের হুমকি দিয়েছে আগুনে পুড়াবে। রাতেই আগুনে পুড়েছে আমার বসতঘরসহ গোডাউন। তারা আমাকে পথে বসিয়ে দিয়েছে, আমি তাদের বিচার চাই।
এ দিকে আগুন দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শ্বশুর ফারুক মিয়া, আমি আগুনের বিষয়ে কিছুই জানি না। সংসার করলে টুকটাক ঝগড়া হতেই পারে। তারা আমাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাসানোর চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে ভৈরব বাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ম্যানেজার আজিজুল হক স্বপন বলেন, রাত ১টায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনি। কিভাবে আগুন লেগেছে তা তদন্তের পর বলা যাবে। তবে আগুনে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।