কিশোরগঞ্জে জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে অসহায় জটিল রোগিদের মাঝে চিকিৎসা বাবদ কোটি টাকার ওপর সরকারি অনুদান বিতরণ করা হয়েছে। আজ ১৯ আগস্ট বুধবার দুপুরে কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে সমাজসেবার উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ রোগিদের হাতে অনুদানের চেক তুলে দেন। জেলার ১৩ উপজেলার ২০৮ জন ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগিদের প্রত্যেকের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক কোটি ৪ লাখ টাকার অনুদান বরাদ্দ দিয়েছে। কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে সদর উপজেলার ৪৬ জন রোগির মাঝে ২৩ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে। অন্যান্য উপজেলার রোগিদের মাঝে স্ব স্ব উপজেলা পর্যায়ে চেক বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোস্তফা কামাল ও জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উবায়দুর রহমান সাহেল এবং সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা. জহির আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।একজন রোগিকে অনুদানের ৫০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হচ্ছে। -পূর্বকণ্ঠ
অনুষ্ঠানে বক্তাগণ বলেন, বর্তমান সরকার অসহায় মানুষদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বা সোস্যাল সেফটিনেট চালু করেছে। এর আওতায় কেবল অসহায় রোগি নয়, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, হরিজন, হিজরাসহ সমাজের বিভিন্ন অবহেলিত অংশের মাঝে ভাতা চালু করেছে।
একসময় ওয়েলফেয়ার স্টেটের খুব প্রচার ছিল। এগুলি বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে দেখা যেত। তখন আমাদের দেশ ধনী দেশগুলির দিকে হাত পেতে থাকতো। বার্ষিক বাজেট ঘোষণার আগে প্যারিস কনসোর্টিয়ামের সভা চলাকালে আমাদের অর্থমন্ত্রীরা সেখানে গিয়ে ঋণ পাওয়ার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণতেন। আজকে আর সেই অবস্থা নেই। আজকে আমাদের দেশকেও ওয়েলফেয়ার স্টেটের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে। সমাজের বিভিন্ন অবহেলিত অসহায় অংশের মাঝে ভাতা বিতরণ করা হচ্ছে। নিজস্ব অর্থে বাজেট প্রণয়ন হচ্ছে। পদ্মা সেতুর মত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে নিজস্ব অর্থায়নে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও মেট্রো রেলের মত বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। করোনার কারণে হয়ত আপাতত অগ্রগতি কিছুটা মন্থর হয়ে গেছে। সেটা সারা বিশ্বেই হয়েছে। এই মহামারি থেকে উত্তরণের পর উন্নয়নের গতি, কাজের গতি আরো বাড়াতে হবে। আগামী দিনে হয়ত সামাজিক নিরাপত্তা বলয় আরো সম্প্রসারিত হবে, ভাতার পরিমাণও বৃ্িদ্ধ পাবে। বঙ্গবন্ধুকে ঘাতকরা হত্যা না করলে দেশ আরো এগিয়ে যেত। তার পরও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার পথে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের হাল ধরেছেন। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে গড় আয়ু বেড়েছে। মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার বেড়েছে। পুষ্টিমান বেড়েছে। আাগমী দিনেও এভাবেই অগ্রগতির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে সমগ্র জাতি প্রত্যাশা করে।