কটিয়াদীতে মুদি ব্যবসায়ী ও কৃষক তাজুল ইসলাম (৫০) হত্যায় দু’জনের ফাঁসির আদেশ ও ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। এদের মধ্যে মা-ছেলে, পিতা-পুত্র, স্বামী-স্ত্রী এবং সহোদরও রয়েছেন। কিশোরগঞ্জের প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম আজ ১৫ মার্চ সোমবার তার রায়ে কটিয়াদী উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের সাহেদ আলীর ছেলে গোলাপ মিয়া ও পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার কোদালকাটিয়া গ্রামের মৃত কিতাব আলীর ছেলে সাইকুল ইসলামকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন ভবানীপুর গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে সুলতান মিয়া, সদর উপজেলার কোদালকাটিয়া গ্রামের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাইকুল ইসলামের দুই ছেলে বাদল ও মোস্তফা, সাইকুলের মা হেনা বেগম, আব্দুর রাজ্জাকের তিন ছেলে সাইদুর রহমান, হাবিবুর রহমান ও রায়হান, আব্দুল হামিদ ও তার স্ত্রী জুলেখা বেগম, ছেলে নিজাম উদ্দিন ও আব্দুল হামিদের ভাই আব্দুর রহিম ও তার স্ত্রী আনিছা বেগম এবং মৃত সিদ্দিক মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়াকে। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাইকুল ইসলামের শিশুপুত্র সোহেলের বয়স ১৫ বছর হওয়ায় তার অপরাধ শিশু অপরাধ আদালতে বিচারাধীন আছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডিত রায়হান ও মিজান ছাড়া রায়ের সময় অন্য সকল আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।কিশোরগঞ্জ আদালত চত্বরে স্বজনদের আহাজারি। – পূর্বকণ্ঠ
মামলার বিবরণে জানা যায়, কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তরের ছেলে তাজুল ইসলামের সঙ্গে জমি নিয়ে পার্শ্ববর্তী ভবানীপুর গ্রামের তাজুল ইসলাম ও সুলতানের বিরোধ ছিল। এর জের ধরে ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি বিকালে তাজুল ইসলাম তার সঙ্গীদের নিয়ে জমিতে কাজ করার সময় প্রতিপক্ষ পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার কর্শাকড়িয়াইল ইউনিয়নের কোদালকাটিয়া গ্রামের আত্মীয়দের নিয়ে দিশীয় অস্ত্রসহ হামলা করেন। এসময় তাজুল ইসলামকে সুঁচালো অস্ত্র (হলঙ্গা) ও রামদা দিয়ে বুকে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। হামলায় সিরাজ, আমিন ও ফরিদা নামে আরো তিনজন মারাত্মক আহত হন। এ ঘটনায় ওইদিনই কটিয়াদী থানায় নিহত তাজুলের মেয়ে মালা বেগম উপরোক্ত আসামিদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছর ১৯ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আরব আলী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আজ মামলার রায় ঘোষিত হয়। এসময় দণ্ডিতদের স্বনজরা আদালত চত্বরে আহাজারি করতে থাকেন।
বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এপিপি অ্যাডভোকেট যজ্ঞেশ্বর রায় চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম জীবন, আর আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অশোক সরকার ও অ্যাডভোকেট আতিকুল হক।