কিশোরগঞ্জ শহরে একদল শিশু করোনা ঝুঁকির মধ্যে অবাধে ঘুরে ঘুরে মাস্ক বিক্রি করছে। এখন ঈদ মার্কেট উপলক্ষে শহরের হাজার হাজার ক্রেতার ভিড়। নিরাপদ দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিপালিত হচ্ছে না। সেই কারণে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালতকে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। হাজার হাজার টাকা জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতির মধ্যেই দরিদ্র পরিবারের একদল শিশু শহরের যত্রতত্র ঘুরে ঘুরে মাস্ক বিক্রি করছে। এদের কেউ কেউ স্কুলে পড়লেও অনেক শিশুই স্কুলে পড়ে না। এদের অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব কি জিনিস, এরা জানেও না।
২৪ মে রোববার সকালে শহরে বেশ কিছু শিশুকে নানা মানের ও নানা দামের মাস্ক বিক্রি করতে দেখা গেছে। শহরের শিক্ষকপল্লীর মৃত ইসলাম উদ্দিনের ছেলে সায়েমকে (৮) দেখা গেছে কিছু মাস্ক নিয়ে গৌরাঙ্গবাজারের ফুটপাতে বসে আছে ক্রেতার আশায়। স্কুলে পড়ে না। অন্য সময়ে মানুষের ফায়ফরমায়েস খাটতো। এখন সেই সুযোগ কমে গেছে। ছোট ছোট ভাই-বোনসহ মায়ের সংসার। এখন দুঃসময়। এই বয়সেই তাকে সেই সংসারে কিছুটা অবদান রাখতে হয়। ১৫ টাকা থেকে ২৫ টাকা দামের মাস্ক বিক্রি করে যতটুকু আয় হয়, তাতে কিছুটা হলেও সংসারের উপকারে আসে। কয়েকদিন আগেও দৈনিক ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকার মাস্ক বিক্রি হতো। কিন্তু এখন সাবরই মাস্ক আছে। ফলে দিন দিন বিক্রি কমে যাচ্ছে। এখন স্কুল বন্ধ। ফলে সায়েমের মতই আরেক শিশু হারুয়া এলাকার প্রথম শ্রেণীতে পড়া বাবুও শহরময় মাস্ক বিক্রি করে বেড়াচ্ছে। এরকম বহু শিশুকেই শহরের সর্বত্র মাস্ক নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এসব শিশুর অধিকাংশই মাস্ক ছাড়া খোলা মুখে শহরে ভিড়ের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, মাস্ক বিক্রি করছে। এদের করোনা ঝুঁকির কোন ভীতি স্পর্শ করে না। স্বাস্থ্যবিধি কি জিনিস, সামাজিক দূরত্বই বা কি জিনিস, এসব এদের জানা নেই।