মুন্সিগঞ্জে গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া কিশোরগঞ্জের কাউসার খান ও তার দুই শিশুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে নিজ এলাকা কিশোরগঞ্জ শহরতলির বয়লা এলাকার পারিবারিক গোরস্থানে। মৃত আব্দুস সালাম খানের ছেলে কাউসার খান (৩৭) মুন্সিগঞ্জে চাকরি করতেন একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে। সপরিবারে ভাড়া বাসায় থাকতেন মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপাড়া এলাকায়। গত ২৮ নভেম্বর ভোর ৪টার দিকে বাসার গ্যাস লাইনের বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে শেখ হাসিনা বার্ণ ইনস্টিটিউট ও প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলন কাউসার এবং তার শিশুপুত্র ইয়াছিন (৫) ও আড়াই বছরের শিশুকন্যা নহর। মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন কাউসারের স্ত্রী শান্তা (২৮)।
কাউসারের মামা আসলামুল হক জানিয়েছেন, ঘটনার দিন গ্যাস লাইনের লিকেজের কারণে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হয়। বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে গেলে কাউসার ও তার স্ত্রী ঘর থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসেন। এরপর দাউ দাউ আগুন জ্বলতে দেখে শান্তা আবার ঘরে ঢোকেন শিশুদের বের করার জন্য। তখন দুই শিশুসহ শান্তা মারাত্মক দগ্ধ হন। দৃশ্য দেখে কাউসারও দৌড়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করতে গেলে তিনিও দগ্ধ হন। পরিবারের চারজনই মারাত্মক দগ্ধ হলে তাদেরকে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ণ ইনস্টিটিউট ও প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা থেকে ১২টার মধ্যে শিশু দু’টি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আর গতকাল ৪ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ৭টার দিকে মারা যান বাবা কাউসার খানও। শিশুদের মরদেহ তাদের কিশোরগঞ্জের পৈত্রিক বাড়িতে নিয়ে এসে শুক্রবার দাফন করা হয়েছে। আর কাউসারের মরদেহ শনিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে নিয়ে আসলে তাকেও শিশুদের কবরের পাশে দাফন করা হয়। কাউসারের স্ত্রী শান্তা এখনও মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। এক পরিবারের তরতাজা তিনটি প্রাণের অগ্নিদগ্ধ হয়ে এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে চলছে শোকের মাতম। তাদের শান্ত করার কারও যেন সাধ্য নেই।