কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনের সংসদ সদস্য ও বিসিবি সভাপতি আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কুলিয়ারচর উপজেলার সাংবাদিকদের জন্য দেওয়া পিপিই প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী, আহ্বায়ক সদস্য দৈনিক আমাদের সময় প্রতিনিধি মো. নাঈমুজ্জামান নাঈম ও উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু মো. শামসুদ্দৌলা হারুন মিলে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, গত ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে ভৈরবে এমপি নাজমুল হাসান পাপনের বাসভবন আইভি ভবনে তাঁর পক্ষে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব জিল্লুর রহমানের একান্ত সচিব সাখাওয়াত উল্লাহ কুলিয়ারচরের সাংবাদিকদের ব্যবহারের জন্য কুলিয়ারচর প্রেসক্লাবের আহবায়ক সদস্য দৈনিক আমাদের সময় প্রতিনিধি মো. নাঈমুজ্জামান নাঈমের হাতে ২০টি ব্যক্তিগত সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) তুলে দেন। এ সময় মাই টিভি কুলিয়ারচর-কটিয়াদী উপজেলা প্রতিনিধি মুহাম্মদ কাইয়ুম হাসান ও দৈনিক স্বাধীন বাংলা প্রতিনিধি মো. জুয়েল মিয়া সাথে ছিলেন।
পরদিন ৮ এপ্রিল বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাবের আহবায়ক সদস্য মো. নাঈমুজ্জামান নাঈম তার ব্যক্তিগত ক্ষমতা বলে কাউকে না জানিয়ে সিনিয়র কিছু সাংবাদিককে পিপিই না দিয়ে তার আয়ত্তে থাকা গোটা কয়েকজন সাংবাদিক, নামধারী ২ সাংবাদিককে প্রেসক্লাবে ডেকে নিয়ে পিপিই বিতরণ করছে এমন সংবাদ পেয়ে প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী সাংবাদিক নাঈমের কাছ থেকে ৭টি পিপিই জব্দ করে। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে ৭টি পিপিই’র মধ্যে ২টি পিপিই ২ জন সাংবাদিকের মধ্যে বিতরণ করেন।
ওইদিন দুপুরে দৈনিক মানবজমিন প্রতিনিধি মুহাম্মদ শাহ আলম, দৈনিক প্রজন্ম ডটকম এর ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি মো. মাইন উদ্দিন ও দৈনিক পূর্বকণ্ঠ এর নিজস্ব প্রতিনিধি শাহীন সুলতানা’কে পিপিই দেওয়ার কথা বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসে ডেকে নিয়ে তাদের পিপিই না দিয়ে নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী ও উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু মো. শামসুদ্দৌলা হারুন বলে সকল পিপিই সাংবাদিকদের মাঝে দেওয়া হয়ে গেছে। তাদের হাতে আর কোন পিপিই নেই।
জানা যায়, এ উপজেলায় হাতেগনা ১৭ জন সাংবাদিক মাঠপর্যায়ে কাজ করে আসছে। ২০টি পিপিই মধ্যে অনেক সাংবাদিক পিপিই না পেয়ে হতাশ হয়ে বলছে বাকী পিপিই গেলো কোথায়?
দৈনিক মানবজমিন প্রতিনিধি মুহাম্মদ শাহ আলম, দৈনিক প্রজন্ম ডটকম ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি মো. মাইন উদ্দিন ও দৈনিক পূর্বকণ্ঠ এর নিজস্ব প্রতিবেদক শাহীন সুলতানা বলেন, তাদের ইউএনও অফিসে ডেকে নিয়ে তাদেরকে পিপিই না দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী ও উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু মো. শামসুদ্দৌলা হারুন বলেন তাদের কাছে আর কোন পিপিই নেই। তারা সাংবাদিক নাঈমের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন।
সাংবাদিক নাঈমের সাথে যোগাযোগ করা হলে নাঈম বলে তার কাছে কোন পিপিই নেই। ইউএনও স্যারের সাথে যোগাযোগ করেন।
তারা আরো বলেন, বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে পিপিই না দিয়ে ইউএনও, সাংবাদিক নাঈম ও উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিলে পিপিই আত্মসাত করেছে।
সাপ্তাহিক দিনেরগান প্রতিনিধি মো. নাদিম ও নিউজ ২৪ ডটকম এর ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি মৌসুমী আক্তার বলেন তারাও কোন পিপিই পাননি।
এ ব্যাপারে প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কাছে যে কয়টা পিপিই আছে এসব পিপিই দাতার নিকট ফেরত দিয়ে দিবো। সাংবাদিকরা ওই জায়গা থেকে নিয়ে আসবে। আমি এসব ঝামেলায় যেতে চাইনা।
সাংবাদিক মো. নাইমুজ্জামান নাঈমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যারা পিপিই পাননি তাদের পিপিই শুক্রবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে পিপিই পৌঁছে দিয়ে আসবো।
শুক্রবার দিন পেরিয়ে রাত হলেও এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত কারোর বাড়িতে গিয়ে পিপিই দেয়নি সাংবাদিক নাঈম।