# মিলাদ হোসেন অপু :-
ভৈরবে ধর্ষণের অভিযোগে স্বামীকে ও পর্নোগ্রাফি মামলায় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে ভৈরব থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উপজেলার শিমুলকান্দি মোল্লা বাড়ি কলেজ গেইট এলাকার আতর মিয়া ওরফে আফতাব উদ্দিনের ছেলে দুবাই প্রবাসী হুমায়ুন মিয়া (৪১) ও হুমায়ুনের সহধর্মিণী মৌসুমি আক্তার (৩০)। আজ ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় গ্রেপ্তারকৃত স্বামী-স্ত্রী দুজনকে কিশোরগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
ধর্ষিতা কিশোরীর মাতা নীলা আক্তার তিনি পৌর শহরের কমলপুর পঞ্চবটি এলাকার শওকত আলীর স্ত্রী।
থানা পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৬ মাস আগে দুবাই প্রবাসী হুমায়ুনের সঙ্গে কিশোরীর ফেসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ৩ মাস আগে হুমায়ুন দেশে আসেন। দেশে আসার পর ওই কিশোরী বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে সে বিভিন্ন তাল বাহানা শুরু করে। ৩ অক্টোবর কৌশলে কিশোরীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে পৌরসভার সামনে দেখা করতে বলে। পরে পৌরসভার সামনে সুলাইমান মিয়ার বিল্ডিং-এর (মোস্তফা মেডিকেল হলের উপরে) ২য় তলায় বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় তালা বন্দী করে কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে হুমায়ুন। ধর্ষণের কথা জানাজানি হলে কিশোরীকে প্রাণে হত্যা করার হুমকি দেন হুমায়ুন। ঘটনার পর বিয়ের আলাপ-আলোচনার প্রসঙ্গে কিশোরী ও তার পরিবার জানতে পারে প্রবাসী হুমায়ুন বিবাহিত। এদিকে ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে হুমায়ুন। ৫ অক্টোবর আবারও কিশোরীকে একাধিক ফোন করে দেখা করতে বলে হুমায়ুন। দেখা না করায় সংরক্ষিত স্পর্শকাতর ভিডিও কিশোরীর কাছে পাঠায় ও ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে হুমায়ুন।
এদিকে ভিডিও পেয়ে সেই ভিডিও হুমায়ুনের স্ত্রী মৌসুমী বেগম তার স্বজন ও কিশোরীর স্বজনদের কাছে ছড়িয়ে দেয়। এ বিষয়গুলো কিশোরীর পরিবার জানতে পেরে ১১ ডিসেম্বর বুধবার ভৈরব থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে মৌসুমির ভাই মানিক বলেন, পরকিয়া সম্পর্ক করেছে আমার ভগ্নিপতি হুমায়ুন। আমার বোনকে ৬ মাস যাবত অনেক কষ্ট দিয়েছে হুমায়ুন। সে দীর্ঘদিন সংসারের কোন খোঁজ খবর নেই না। পঞ্চবটির এক মেয়ের সাথে পরকিয়া করে সব টাকা পয়সা ওই মেয়েকে দিয়ে দিতো। আমার বোনকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়েছে ওই পরিবার। আমার বোনের তিনটি সন্তান রয়েছে। পুলিশ আমার বোনকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। আমরাও চাই অন্যায়কারীর সাজা হোক। আমার বোনের কোন অপরাধ নেই।
এ বিষয়ে ধর্ষিতা কিশোরীর চাচা সজীব মিয়া বলেন, আমরা বিচার পেতেই আইনের আশ্রয় নিয়েছি। প্রেমের সম্পর্কে ফাঁসিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে। এমনকি ভিডিও করে রেখে ব্লেকমেইল করতো হুমায়ুন। তার স্ত্রী মৌসুমিও জড়িত ছিল। আমরা স্বামী-স্ত্রী দুইজনেরই বিচার চাই।
এ বিষয়ে ভৈরব থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীন বলেন, অভিযোগকারীর মা ও ধর্ষণের শিকার মেয়ে ১১ ডিসেম্বর বুধবার থানায় এসে মামলা করেন। ধর্ষণের বিচার চেয়ে থানায় এসে আত্মহত্যার হুমকি দেয় মা ও মেয়ে। কিশোরীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রবাসী হুমায়ুনকে ভৈরব র‌্যাব ক্যাম্পের সহায়তায় শিমুলকান্দি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত স্বামী হুমায়ুন মিয়াকে দেখতে থানায় আসে তার স্ত্রী মৌসুমি আক্তার। এ সময় পুলিশ মৌসুমিকে পুলিশ পর্নোগ্রাফি মামলায় আটক করে গ্রেপ্তার দেখায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের দুজনকেই কিশোরগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।